মধ্যবিত্ত ছেলের ভালবাসা ( ভালোবাসার গল্প কাহিনী )

ভালোবাসার গল্প কাহিনী আপনার কি আর কোনো শার্ট নাই?প্রতিদিন
খালি দুইটাই শার্ট রিপিট করে পড়েন!
– না,নাই।
:- কেনো?
– টাকা নাই,তাই।
– বাবা রিটায়ার্ড করেছেন,তাছাড়া আমি বেকার।বাবার পেনশনের টাকা দিয়ে
পড়ালেখা করছি।
:- এই দুইটা শার্ট দিয়েই আপনার চলে?
– আসলে,আমার শার্ট দুইটা না তিনটা।
একটা শার্ট রেখে দিয়েছি আলাদা।
কোথাও বেড়াতে গেলে সেটা পড়ি।
আর আজকে যে শার্ট পড়ি,সেই শার্টটা
সেদিন রাতেই ধুয়ে ফেলি।
আর পরেরদিন আরেকটা শার্ট পড়ি।
:- হুম!কিছু খেয়েছেন আপনি?
– না।
:- কেনো?
– মানিব্যাগে ১২ টাকা আছে।দশ টাকা বাস
ভাড়া,
আর বাকি দুই টাকা দিয়ে নিচের তলার
অবন্তির জন্য চকলেট কিনে নিয়ে যাবো!
ভালোবাসার গল্প কাহিনী
:- অবন্তি কে?
– নিচের তলায় থাকে।ক্লাস থ্রি-তে পড়ে।
:- একটা কথা বললে কথাটা রাখবেন?
– না।
:- কেন?
– আগে জানতে হবে কথাটা কি,
তারপর বলতে পারবো কথাটা রাখবো নাকি
রাখবো না!
:- এই টিফিন বক্সে খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ কড়া
করে ভাজা আছে।দয়া করে খেয়ে নিয়েন।
– খাবো না।
:- কেনো?আপনার না খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ
ভাজা খুব প্রিয়?
– আপনাকে কে বলেছে এই কথা?
:- সিদ্দিক ভাই।
আপনার বন্ধু।
– আপনি আমাকে এভাবে খাবার এনে
দিচ্ছেন কেনো?
আমি তো আপনার পরিচিত কেউ নই,
তুমি বরং আমার জুনিয়র।
:- শুনেছি,আপনি নাকি আমাকে ভালোবাসেন?
– না।
এই উদ্ভট কথা আপনার মাথায় এলো কেমনে?
:- সিদ্দিক ভাই তো বললো,আপনি আমাকে ভালোবাসেন।
– এসব কোনো কথায়ই আমি বলিনি।
দুঃখিত!
ভালোবাসার গল্প কাহিনী
:- আপনি অনেক সুন্দর লেখালিখি করেন,প্রতিদিনই পড়ি আপনার লেখা। মন খারাপ থাকলে আপনার হাসির স্ট্যাটাস
পড়ি।
মাঝে মাঝে ছোটগল্পগুলো পড়ি। আপনি কিন্তু অনেক রোমান্টিক প্রেমের গল্প লিখতে পারেন, তবে আফসোসের বিষয় বেশিরভাগ গল্পের
শেষে বিচ্ছেদ থাকে।
– কারো কথা চিন্তা করে লেখিনা,নিজের মন যা চায় তাই লিখি।
:- আমরা কি বন্ধু হতে পারি?
– না।
:- কেনো?
– কারন,আপনার চোখে বন্ধু্ত্ব-র ছাপ নেই।
আছে কেবল মায়া।
এই মায়া থেকেই ভালোবাসা জন্মাবে।
:- জানি না!
আচ্ছা একজন পাঠিকা হিসেবে আপনাকে গিফট হিসেবে খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ ভাজা
দিয়েছি, খেয়ে নিয়েন।এবার ফিরিয়ে দিয়েন না..!!
– হুম।
:- আসি তাহলে আজকে!
– আচ্ছা।
(পরেরদিন সকালে ক্যাম্পাসে)
:- কি ব্যাপার আপনি এখানে বসে আছেন.!
আমি আপনাকে খুজছিলাম কতোক্ষন ধরে। ভালোবাসার গল্প কাহিনী
– কেনো?
:- এই যে দেখুন,
আজকে নীল শাড়ি,কালো কালো
ব্লাউজ,ঠোটে লাল লিপস্টিক আর কপালে
কালো টিপ দিয়ে এসেছি।
আর আমার পছন্দমতো চুলের খোপায়
কাঠগোলাপ গুঁজে দিয়েছি।
সেদিন আপনার লেখায় পড়েছিলাম এমন
সাজের কথা।
কেমন লাগছে আমায় এই সাজে?
– যেমনটা লাগার কথা!
:- কেমনটা লাগার কথা?
– জানি না!কেনো পড়েছেন এগুলো?
:- এমনিই।পছন্দ হলো তাই।
– আপনার ঠোট কাঁপছে আর কোনো কিছু
লুকাচ্ছেন আপনি,
যা আপনার চোখ দেখলেই বুঝা যাচ্ছে।
ভালোবাসার গল্প কাহিনী
:- কিছুনা।
– ঠিক আছে,আপনি আজকে থেকে আমার
সাথে যোগাযোগ করবেন না।
:- কেনো? কি হয়েছে?
– আমাদের বেশি কথাবার্তা,যোগাযোগ
করার দরকার নেই।
:- শুনেন…
– বলুন।
:- আমি অনেক দিন থেকেই আপনাকে পছন্দ
করি,
যেদিন আপনার লেখা আমাকে ইপ্সিতা
দিয়েছিলো
সেদিন থেকেই আপনার লেখা নিয়মিত
পড়ি।
এরপর থেকে আপনার কথা বার্তা,চলাফেরা,
লেখালেখি সব কিছুই ভালো লাগে আমার।
সত্যি বলতে,
আমি আপনাকে ভালোবাসি!
– আপনি কি জানেন না?
আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল না।
তাছাড়া আমি এখনো বেকার।
:- তো?
– তো,আমার পক্ষে এসব সম্ভব না।
অন্য দশটা বয়ফ্রেন্ডের মতো আমি আপনাকে
দামি গিফট দিতে পারবো না।দামি
রেস্টুরেন্টে খাওয়াতে পারবো না,রাত
জেগে মোবাইলে কথা বলতে পারবো না।
:- আমিও মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে,ছোটকাল
থেকেই সাধারন পরিবেশে বড় হয়েছি।
আপনার তো জানা থাকা উচিত,যে মধ্যবিত্ত
পরিবারের ছেলে মেয়েগুলার মাঝে
বিলাসিতা ভাব তেমন থাকে না।
:- আমি জানি।তবে বাস্তবতাও মাথায় রাখা
উচিত।
আমি এখনো বেকার,কবে চাকরী হবে তার
কোনো ঠিক নেই।
– ভবিষ্যৎ এ কি হবে তা আমরা কেউ জানি
না।তাই বলে বর্তমান সময়টা কে ভবিষ্যতের
শঙ্কায় কাটিয়ে দিবো?
ভালোবাসার গল্প কাহিনী
ভরসার হাত ( রোমান্টিক ভালোবাসা )
:- আমাদের উচিত হবে দুইজন কে দুজনের মতো
করে ভালোবেসে যাওয়া,তবে অন্য সব
প্রেমিক-প্রেমিকার মতো আমাদের
সম্পর্কটা হবে না।
আমরা ভালোবাসবো ঠিকই,কিন্তু খুব কাছে
যাওয়া হবে না।নিয়মিত দেখা কিংবা
ঘুরাঘুরি হবেনা।
কারো প্রতি কোনো এক্সপেকটেশন থাকবে
না।
একে অপরের প্রতি সম্মান-ভালোবাসা
বজায় রেখে আমরা অপেক্ষা করে যাবো।
যতোদিন পর্যন্ত আমার পরিবারের আর্থিক
অবস্থাটা স্বচ্ছল না হচ্ছে।
যদি তুমি অপেক্ষা করতে পারো তাহলে
ভালো,
আর না পারলেও কোনো আফসোস নেই।
:- ভালোবেসেছি যখন তখন অপেক্ষা না করে
থাকি কেমনে?
আমি অপেক্ষা করতে রাজি,তবে প্রতি
মাসে অন্তত একবার আপনার হাত ধরার সুযোগ
করে দিয়েন।
এতেই হবে।
– চলো তোমাকে ক্লাসে দিয়ে আসি এখন!
:- আচ্ছা।
~মাঝে মাঝে সব সম্পর্কই রোমান্টিক ভাবে
এন্ডিং হয় না।গল্পের মতো হুটহাট
প্রেমিকের চাকরি হয়ে যায় না।
বাস্তবতা মানেই ভিন্নতা।
মাঝে মাঝে বাস্তবতা কে মেনে নিয়েই
ভালোবেসে যেতে হয়।~
nice