Bangla Romantic Golpo ।ঘরে ঢুকেই দেখলাম আব্বু সোফায় বসে পত্রিকা পড়ছে , আব্বু আমার দিকে তাকিয়ে–
আব্বু:কিরে তুলিমনি জামাই কয়,?
(আব্বুর প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে সোজা রান্না ঘরে চলে গেলাম ,
জানি আম্মু এখন রান্না ঘরেই থাকবে,
আর এটাও জানি এখন আব্বু খুব কষ্ট পেয়েছে আমার আচরনে,
পেলে পাক কষ্ট ,
আমাকে কষ্ট দেওয়ার সময় কি আব্বু একবারও চিন্তা করেছে যে আমি কতো কষ্ট পাবো)
আমি: আম্মু-ও-ও , আম্মু-ও-ও
রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প part 1
আম্মু: আরে আমার তুলি মনি এসে গেছে , কেমন আছিস লক্ষি মা আমার।
আমি: যেমন তোমরা রেখেছো , তেমনি আছি
আম্মু:এখনোও আমাদের উপর রাগ করে আছিস মা,তা জামাই কোথায়
আমি: বাহ আসতে না আসতেই জামাইর খবর নেওয়া হচ্ছে খুব ,
তুমিও আমাকে ভালবাস না আব্বুর মতো
আম্মু:কি সব বলে আমার পাগলি মেয়েটা,
তুই আমাদের একমাত্র মেয়ে আমাদের চোখের মনি।
আর দেখ মা জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে এগুলো খোদার হাতে,
মানুষের কোনো সাধ্য নেই তা পরিবর্তন করার।
আর মেয়ে মানুষ এর বিয়ে বার বার নয় একবারি হয় ,
তাই পারভেজ এর সাথে তুই যতো নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবি ততোই তোর মঙ্গল ।
আর ছেলেটাও এতিম আমরা না ভালোবাসলে কে ভালোবাসবে শুনি?
আমি: হয়েছে হয়েছে যাও ভালোবাসো গিয়ে তোমাদের বুড়ো জামাই কে
আম্মু: ছিঃ এসব বলতে নেই পাগলি মেয়ে,
তা এই টেএ টা একটু নিয়ে বসার ঘরে যা তো ,
জামাই কখন থেকে বসে আছে ।
আমি; আমি পারবো না, তোমাদের জামাই তোমরাই আপপায়ন করো গিয়ে।
আম্মু:লক্ষি মা নিয়ে আয় ,আমি সাথে কয়টা নিয়ে যাব বল
আমি:আসছি আসছি
আম্মু: পাগলি একটা
(বসার রুমে গিয়ে মাথাটা আবার গরম হয়ে গেলো ,
কি মজা করে গল্প করছে বুড়োটা আব্বুর সাথে। আম্মু কে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে সালাম দিলো)
পারভেজ: আসসালামুয়ালাইকুম আম্মি, কেমন আছেন?
আম্মু: ওয়ালাইকুম আসসালাম,আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি বাবা , তুমি কেমন আছো।
পারভেজ: আছি আপনাদের দোয়ায় ভালো,
আম্মু;কিরে তুলি মা টেএ টা রাখ জামাইর সামনে,আর জামাই খাও তো তুমি।
আমি;(রাগে আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে,
ভালোবাসার গল্প
আমার চেয়ে এই বুড়োর প্রতি বাবা মায়ের ভালোবাসা, বেশি তাই ট্রে টা রেখে চলে আসতেই মায়ের প্রশ্ন–
আম্মু:কিরে কোথায় যাচ্ছিস তুলিমনি ,
আমি:আমার ক্লান্ত লাগছে তাই ঘরে গিয়ে বিশ্রাম নেবে,
আব্বু আম্মু: জামাই কে নিয়ে একবারে যাস
আমি: পারবো না আমি , তোমাদের জামাইকে তোমরাই নিয়ে যেও(এই বলে চলে আসলাম আমার ঘরে)
আব্বু:বাবা পারভেজ, আমার মেয়ের আচরনে তুমি কষ্ট পেও না বাবা ।
ও একদমি আমার মতো বাইরে রাগি হলেও ভিতরে অনেক ভালো।
পারভেজ:না আব্বু রাগ করবো কেনো ও এখনোও বাচ্চা মেয়ে।
আম্মু:তা বাবা যাও রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নাও
পারভেজ: আচ্ছা আম্মু।
এইদিকে আমি রুমে এসে মুখ ঘোমরা করে বসে আছি,
আর আমার বুড়ো বরটা মাএ আমার ঘরে এসে ঢুকেছে,
পারভেজ:মন খারাপ নাকি শরীর খারাপ,
আমি:যাই খারাপ হোক তাতে আপনার কি হে
পারভেজ: আমার কি মানে, আমার সামনে একটা ছোট বেবির মন খারাপ করে বসে আছে ,
আর আমি চুপ করে তা দেখবো তা কি হয়।
আমি: ওই আপনি কাকে বেবি বললেন ,
আমার বয়স কতো জানেন ১৯ বছর আর আমি অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি।বুঝলেন
পারভেজ:তাই নাকি, আমি তো মনে করেছি তুমি ক্লাস সিক্সে পড়ো ,হা হা হা হা
আমি:এই একদম হাসবেন না কিন্তু বুড়ো বর একটা।
আর আমাকে কোন এংগেল দিয়ে সিক্সে পড়া মেয়ে মনে হয়।
পারভেজ: তাহলে আমাকে তোমার কোন এংগেল দিয়ে বুড়ো মনে হয়।
আমি: আপনার বয়সের দিক দিয়ে , আপনি বুড়ো
পারভেজ:তাহলে তোমার আচরনের দিক দিয়ে ক্লাস সিক্সের পড়ুয়া মেয়ে মনে হয় ,
আর তোমার ধারনা আছে আমার অফিসের মেয়েরা আমার জন্য পাগল
আমি: হা হা হা হা হা , আপনার মতো বুড়োর জন্য পাগল,
তাহলে শুনে রাখুন আমার ভার্সিটিতে সব ছেলেরা আমার জন্য পাগল (চুলে একটা ঝাপটা দিয়ে বললাম)
পারভেজ : হাস্যকর কথা হলেও বিশ্বাস করলাম (মুখ চেপে হেসে)
রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প
আমি: হাস্যকর মানে,আর আপনি–(কিছু বলার আগেই বুড়ো বর টা ওয়াশ রুমে চলে গেলো,
রাগে ইচ্ছা করছে উনার সব জামা কেটে ফেলি কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই
আমার বুড়ো বরটা ব্যাগে লক করে রেখেছে।
তাই ঘাপটি মেরে বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই।
দুপুর হয়ে এলো তাই আমি নিচে এসে দেখি আম্মু টেবিলে খাবার সাজিয়ে বসে আছে , সাথে আব্বু ও।
(আমি গিয়ে টেবিলে বসে আম্মু কে বললাম)
আমি: আম্মু খেতে দাও তো খুব জোরে খিদে লেগেছে।
আম্মু:জামাই কোথায়,
জামাইকে নিয়ে আসতে পারলি না মা।
আমি: আমি জানি না তোমাদের জামাই কোথায়,
আর আমি পারবো না আনতে ডেকে ,
তোমাদের জামাই তোমরাই আনো গিয়ে।
আব্বু:কি হচ্ছে কি এসব তুলি,
দিনে দিনে বড় হচ্ছো আর বেয়াদব হচ্ছো ।
যাও এখনি পারভেজ কে ডেকে নিয়ে এসো।
এ নিয়ে আর একটাও কথা আমি শুনতে চাই না।
আমি: আব্বুর কথা শুনে আমার কান্না চলে আসলো ,
কোনো রকমে টেবিল থেকে উঠে চলে আসলাম,
হাদারামটাকে ডাকতে।
আম্মু:এই কি দরকার ছিলো মেয়েটাকে এমন করে বকার ।
এমনিতেই তো আমার মেয়েটার মন খারাপ,
তার উপরে তুমি এমন করতে পারলে।
আব্বু:দেখো তুলির মা আমি যা করেছি মেয়ের ভালোর জন্যই করছি।
আর আমার যতোটুকু মনে হয় এখনোও তোমার মেয়ে পারভেজ কে মেনে নেই নি।
তাই আমি চাই আমার মেয়ে বুঝুক পারভেজ এর কাছেই ওর আসল ঠিকানা।
আম্মু:এর কারনে তো ও তোমার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ,
আব্বু: তুমি চিন্তা করো না, যখন তুলি পারভেজ কে মেনে নেবে তখন আপনা আপনিই ও বুঝবে আমি ওর ভালো ছাড়া খারাপ চাইনি।
আম্মু:তাই জেনো হয় গো , আল্লাহ আমার মেয়েটাকে বুঝ দিক ।
ঘরে ঢুকার আগে আমি চোখের পানি মুছে ফেললাম যাতে বুড়ো টা না দেখতে পায় আমি কাঁদছি,
নয়তো আবার লজ্জা দেবে বাচ্চা বলে,
ঘরে ঢুকে দেখি আমার বুড়ো বরটা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াতে ব্যস্ত।
আমি:এই যে শুনছেন—
পারভেজ: হুম বলো ,
আমি: আম্মু নিচে ডাকছে আপনাকে ,খাবেন চলুন।
রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প
পারভেজ:ওহ আচ্ছা তুমি যাও আমি আসছি
আমি: আমি যাবো মানে , আব্বু বলেছে আপনাকে সাথে করে নিয়ে যেতে বুঝলেন।
পারভেজ: আব্বু বলেছে তাই এসোছো ,
আমি তো মনে করেছি আমাকে ভালোবেসে নিতে এসেছো।
আমি:ইসসস কি শখ আমি উনাকে ভালোবেসে নিতে আসবো ,
আমার তো বয়েই গেলো আপনার মতো বুড়োকে ভালোবাসতে
পারভেজ: একদিন ঠিকই ভালোবাসবে এই বুড়োকে মনে রেখো।
আমি:সেগুরে বালি , আপনার এই শখ কখনোই পূরণ হবে না বুঝলেন।
পারভেজ:সময় সব বলে দেবে
আমি: ওকে ,এখন চলুন নিচে সবাই অপেক্ষা করছে।
পারভেজ:হে চলো
(টেবিলে বসে আমি খাচ্ছি আর আমার বুড়ো বরটা আর আব্বু আম্মু বকবক করছে আর আমি দাঁতে দাঁত চেপে নিচের দিকে তাকিয়ে খেয়ে যাচ্ছি)
আব্বু:তা বাবা পারভেজ , তোমার চাকরির খবর কি?
পারভেজ: এইতো আব্বু ভালোই ,
আম্মু:তা তোমার বোনেরা কেমন আছে বাবা?
পারভেজ:জি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে।
আব্বু:তা বাবা কয়েক দিন থাকতে হবে কিন্তু।
পারভেজ: না আব্বু কালকেই চলে যেতে হবে , কালকেই ছুটি শেষ।
আম্মু:কি বলো কি বাবা মাএ আজ এলে,
আর কালকেই চলে যাবে তা কেমন করে হয়।
আর মেয়েটাও মাএ এলো
পারভেজ: না মানে আম্মু,ছুটি তো শেষ তাই আর কি।
কিন্তু তুলি যদি কয়দিন থাকতে চায় ও থাকুক পরে এসে না হয় আমি নিয়ে যাবো।
আমি:(আমি হঠাৎ বলে উঠলাম — না আমি ও চলে যাবো আপনার সাথে )
আম্মু:কেনোরে মা ?
আমি: এমনিতেই থাকবো না ।
আব্বু: আচ্ছা সে যাবা যাবে না হয় এখন কথা না বলে জামাইকে খেতে দাও তুলির মা
(আমি মনে করেছিলাম আব্বু একটাবার হলেও বলবে তুলি মা কয়েক দিন থেকে যা ,
কিন্তু আব্বু একটি বার ও বললো না)
খাবার শেষ করে আমি চলে গেলাম রুমে সাথে আমার বুড়ো বরটাও।
আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছি আর উনি ঘরে এসে শার্ট প্যান্ট পড়ছে।
আমি: কোথায় যাচ্ছেন ,এই ভরদুপুরে আপনি?
পারভেজ: তেমন কোথাও না , আমার এক কলিগ এর সাথে দেখা করতে।
আমি: ছেলে না মেয়ে কলিগ।
পারভেজ: মেয়ে কলিগ, খুব ভালো মেয়েটা
আমি: ( খুব ভালো তাই না) তা বিবাহিত নিশ্চয়।
রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প
পারভেজ:আরেহ না,এখনোও বিয়ে করে নি।
আমি:কেনো বিয়ে করে নি
পারভেজ: আজব কেনো বিয়ে করে নি তা আমি কি জানি।আর ও দেখতে ও অনেক সুন্দর
আমি:(অনেক সুন্দর তাই না বুড়ো লুচু , দাঁড়া তোকে দেখাব মজা (মনে মনে) )
আচ্ছা কেমন সুন্দর মেয়েটা
পারভেজ: দাঁড়াও বলছি (এই বলে পারভেজ আমার কাছে আসতে লাগলো)
আমি:এই কি হচ্ছে কি, আপনি আমার কাছে আসছেন কেনো—
1 thought on “রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প Part 2”